
রক্তাক্ত এক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরশাসনের পতনে জাতি যখন এক ঘোর অনিশ্চয়তায় তখন মুক্তির দিশারী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী। ২০২৪ এর ৫ আগস্ট এক মহাদুর্যোগে তারা জাতিকে বিপর্যয় থেকে রক্ষা করে। নিজেরা ক্ষমতার মোহ ত্যাগ করে বাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকে তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি অন্তবর্তী সরকার গঠনে উদ্যোগী হয় তারা। নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূসের সেই সরকার এখন দেশকে এক নতুন অধ্যায়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
সেনাবাহিনীর এই উজ্জ্বল ভূমিকার জন্য বিশেষভাবে স্মরণ করতে হবে বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের নির্লোভ ও পেশাদারিত্বপূর্ণ মনোভাবকে। তিনি দেশকে চরম অস্থিরতা থেকে উদ্ধার করে ক্রমশ একটা শান্তিপূর্ণ অধ্যায়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। দেশকে সুস্থ গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে নিতে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য প্রথম থেকেই তাগাদা দিয়ে আসছেন সেনাপ্রধান।
৫ আগস্টের পর সরকার বিহীন অবস্থায় টানা তিনদিন দেশকে রক্ষা এবং জনগনের জানমালের হেফাজত করেছে দেশপ্রেমিক সৈনিকেরা। ৮ আগস্ট সরকার গঠনের পরও ভেঙে পড়া পুলিশ বাহিনী ও র্যাব যখন সম্পূর্ণ অকার্যকর তখন জনগনের নিরাপত্তা রক্ষায় অনণ্য ভূমিকা পালন করেছে সেনাবাহিনী। সেই সাথে আন্দোলনের সময় বিধ্বস্ত ও ভেঙে পড়া অবকাঠামো সংস্কারে তাদের প্রাণান্ত পরিশ্রম পুরো জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরও তাদেরকে সর্বপ্রকার সহযোগিতার মাধ্যমে সেনাবাহিনী দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। এর মধ্যে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে, অনেক উস্কানি এসেছে কিন্তু আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী সেই ফাঁদে পা দেয়নি।
সম্প্রতি বিডিআর বিদ্রোহের ১৬ বছর পূর্তিতে বিজিবি’র এক অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান স্পষ্টভাবে বলেছেন- দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে দিয়ে সেনাবাহিনী এখন ব্যারাকে ফিরতে চায়। কারণ তাদের মূল দায়িত্ব দেশরক্ষা, রাজনীতি বা দেশশাসন নয়। সেই সাথে তিনি বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোর সেনাবাহিনীর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়নেও অসামান্য ভূমিকা রাখছেন।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই মূহূর্তে সেনাবাহিনী বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের আস্থা ও নির্ভরতার সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। এর মর্যাদা সবার কাছে পর্বতসম। এদশের আবাল বৃদ্ধ বণিতা সবার সম্মিলিত উচ্চারণ - সেনাবাহিনী আমাদের অহঙ্কার।