
আজ ৪ঠা বৈশাখ। আমাদের এলাকায় আজ বৈশাখী মেলা। কৈশোরে মেলার দিন মাথা ঠিক থাকতো না। পাগলের মত হয়ে যেতাম। যে করেই হোক টাকা যোগার করে মেলায় যেতে হবে। সারাদিন মা চাচি দের সাথে ঘ্যান ঘ্যান করে ১০০ টাকা হলে ছুটে যেতাম মেলায়........
মেলায় যায়রে। আহ! সেকি আনন্দ বোলে বুঝাইতে পারিলাম না। গ্রামের সারা রাস্তা জুড়ে আমাদের বয়সী শিশু কিশোর। সবার হাতে রঙিন গাড়ি, বেলুন, পটকা, বল, লাটিম সহ আরো কত কিছু।
মেলার মধ্যি খালি মানুষ আর মানুষ। ঠেলা ঠেলী তাও ভালোলাগে। কে যেন বলে, মেলায় আসছো ঠেলা খাইতে। আমরা তো হাসতে হাসতে শেষ।
তরমুজ, ফুড, গরম গরম জিলাপী, মিস্টি, আমৃত্তি, ছানা, সরমালাই, আরও কত খাওন বলে শেষ হবে না।
নাগরদোলা, লাঠিরখেলা মেলার অন্যতম প্রধান আকার্ষণ। সব বয়সের মানুষ।
বাড়ি ফেরার পথ জুড়ে নতুন গাড়ির শব্দ, বাঁশির সুর, বাড়ির উঠোনে পই পই রঙিন বেলুন, চাচতো ভাই বোন মিলেমিশে হই হুল্লোড়, বৈশাখ মাস জুরে মেলার আনন্দ জিইয়ে রাখি।
আমি কাগজের রঙিন ফুল কিনি। বাসায় পড়ার টেবিলে রাখি। ফুল দেখে মনটা ভালো হয়ে যেত। বই পড়তে ভালো লাগতো।
ঘরের সবার জন্য মিষ্টান্ন, তরমুজ, নিজের জন্য ঢোল গাড়ি, গরুর গাড়ি, বোনের জন্য ফুল, আয়না, মাটির পুতুল, কলস নিয়ে বাড়ি ফিরি। খেলনা বাটি নিয়ে কত কারাকারি/খুঁনসূটি হয়।
এখন ভাইবোন গুলো দূরে। যে যার মত ব্যস্ত। চাকরী করি। বৈশাখী ভাতা পাই। প্রতিবার বৈশাখ আসে যায়, মেলা বসে। কিন্তু সেদিনের সেই আনন্দগুলো খুঁজে পাই না।
নয়াশতাব্দী/জিএস