
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের মসলার খুচরা বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। পাইকারী বাজারে দাম স্থিতিশীল থাকলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা পরিবহন খরচ, শ্রমিক মজুরি ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মসলার ক্রয়মূল্য বেড়ে যাওয়ায় বিক্রিও করতে বাধ্য হচ্ছেন উচ্চমূল্যে। এর ফলে বাজারে বেশ কিছু মসলার দাম বেড়েছে, যদিও গত বছরের তুলনায় অনেক মসলার দাম কমেছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কালোবাজারিরা মসলার মজুদ করার কারণে পরিবহন ও শ্রমিক খরচ বাড়লেও তাদের মসলার বিক্রয়মূল্য আমদানির দামের চেয়ে কম রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ বিরাজ করছে এবং তারা সরকারের কঠোর মূল্য নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানাচ্ছেন।
খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর ও কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক রাইসুল ইসলাম বলেন, “আমরাও মসলা নিয়ে স্বাভাবিকভাবে বাজার পরিচালনা করতে পারছি না। কালোবাজারিরা প্রচুর মসলা মজুদ করেছে, যার কারণে বাজারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে।”
সরাসরি বাজারে দেখা গেছে, পেঁয়াজ, আদা, রসুন ও শুকনা মরিচের দাম কম থাকলেও এলাচ, জিরা, দারুচিনি ও ধনিয়া এখনও উঁচুমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্রয়মূল্য বাড়ার কারণে বিক্রয়মূল্যও বাড়াতে হচ্ছে, ফলে ক্রেতা কমে গেছে।
কাজীর দেউড়ি বাজারের এক দোকানি বলেন, দাম কমে আসছে টিভি ও পত্রিকায়, কিন্তু বাস্তবে আমরা কম দামে মসলা পাচ্ছি না। সবাই একই দামে মসলা কিনছে। আরেক দোকানি রেয়াজ উদ্দিন জানান, আমরা বেশি দামে কিনছি, তাই বিক্রিও বেশি দামে করতে হচ্ছে। ক্রেতা কম, তবে মজুদ পর্যাপ্ত।
এদিকে সরেজমিনে আরো দেখা গেছে, বেশ কিছু মসলার দাম গত বছরের তুলনায় কমেছে। পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, যা গত বছরের তুলনায় ২০ টাকা কম। আদা ১১০ টাকায় (কমেছে ১৫০-২৯০ টাকা), রসুন ১৮০ টাকায় (৩৫ টাকা কম), শুকনা মরিচ ২৮০ টাকায় (১২০ টাকা কম), তেজপাতা ১৪০ টাকায় (১০ টাকা কম), লবঙ্গ ১,২৫০ টাকায় (৫০ টাকা কম), গোলমরিচ ১,২০০ টাকায় (প্রায় ১০০ টাকা কম), দারুচিনি ৫৫০ টাকায় (১০ টাকা কম), ধনিয়া ২০০ টাকায় (২০ টাকা কম) এবং জিরা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। তবে সবচেয়ে দামি মসলাগুলোর মধ্যে রয়েছে এলাচ। সাদা এলাচ কেজিপ্রতি ৪০০ টাকা কমে এখন খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩,৮০০ থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত, আর কালো এলাচ ২০০ টাকা কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ২,৬০০ টাকায়।
এবারের বাজারে অনেক মসলার দাম গত বছরের তুলনায় কম উল্লেখ করে কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, “বেশ কিছু মসলার দাম কমলেও তা যথেষ্ট নয়। কিছু মসলার দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের তৎপরতা জরুরি।” তিনি আরও বলেন, “পাইকারদের মিথ্যা কথা না খুচরা ব্যবসায়ীদের কথা সঠিকভাবে যাচাই করা প্রয়োজন।
নয়াশতাব্দী/ই